মাজহারুল মিচেল: [৩] মহাখালী কড়াইল বস্তি থেকে রাশিদা বেগম তার ছেলেকে নিয়ে এসেছেন ডিএনসিসি’র (ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন) ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালের আউটডোরে। প্রায় দুই ঘন্টা যাবৎ বসে আছেন সেখানে। কিন্তু সিরিয়ালে এগুচ্ছে না।

[৪] হাসপাতালটির পরিচালক কর্ণেল এ কে এম জহিরুল হোসাইন খান জানান, প্রায় প্রতিদিনই হাসপাতালে ক্রমান্বয়ে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সে তুলনায় চিকিৎসক ও দক্ষ জনবল না থাকার ফলে এ ধাক্কা সমন্বয় করাটা কিছুটা কঠিন হচ্ছে। 

[৫] ডেঙ্গুর চিকিৎসা সব জায়গাতেই একই উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু রাজধানীকে না নির্ধারণ করে যদি স্থানীয়ভাবেই সবাই চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে এ সংকটের সমাধান হবে। 

[৬] তিনি বলেন, দেশের সব সরকারি হাসপাতালেই ভালো মানের চিকিৎসক রয়েছেন। আমরা চিকিৎসার জন্য বিকেন্দ্রীয়করণ করলে চিকিৎসার সেবার মান আরও বেশি ভালো পাওয়া যাবে।

[৭] এ হাসাপাতালের জুনিয়র কমিশন অফিসার ইউনুস খান জানান, বর্তমানে ৩১৪ জন এখানে ভর্তি আছেন। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ জন ভর্তি হয়েছেন। ৩০০ জন আউটডোর থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

[৮] উত্তরা উইমেনস্ হাসপাতাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডা. তাসলিমা ইসলাম জানান, উত্তরার যত হাসপাতাল রয়েছে- বেশিরভাগেরই ডেঙ্গুর জন্য বরাদ্দকৃত সিট খালি নেই। এখন তাদের অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের সিটে রাখতে হচ্ছে।

[৯] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম বুধবার ডেঙ্গু বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা সিটিতে এক হাজার ৩২৭ জন এবং সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) এক হাজার ৩২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

[১০] গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে মোট দুই হাজার ৩৭৭ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা সিটির বিভিন্ন হাসপাতালে এক হাজার ২০৩ জন। আর সারাদেশের (ঢাকা সিটি ব্যতীত) বিভিন্ন হাসপাতালে থেকে এক হাজার ৭৪ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।

[১১] বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ঢাকা সিটিতে  ১০ জন এবং সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) চারজন।

[১২] এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটির ১৭২ জন এবং সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ৪৩ জন মারা যান।

[১৩] চলতি বছরের ২৬ জুলাই পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৩৪১ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ২৩ হাজার ৬৭৬ জন ও সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ১৬ হাজার ৬৬৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।

[১৪] চলতি বছরে এ পর্যন্ত মোট ৩১ হাজার ৯৩৭ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা সিটির বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ১৮ হাজার ৭৪৪ জন এবং সারাদেশের (ঢাকা সিটি ব্যতীত) বিভিন্ন হাসপাতাল ১৩ হাজার ১৯১ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।

[১৫] বর্তমানে সারাদেশে মোট আট হাজার ১৮৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ঢাকা সিটিতে চার হাজার ৭৬০ জন এবং সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) তিন হাজার ৪২৯ জন।

[১৬] গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৮১ জন মারা যান। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব